December 22, 2024, 3:54 pm
এসএম শামীম রানা/
মহামারী করোনা ভাইরাসের ভয় উপক্ষো করে কুষ্টিয়ায় নানা বয়সী মানুষ ঈদের কেনা কাটার জন্য ঘর ছেড়ে মার্কেটে বেরিয়ে এসেছে। জেলা প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময় সকাল ১০টার আগেই মার্কেটের সড়কগুলোতে যেন মানুষের ঢল নামে।
সরকারিভাবে কেনা-কাটা সীমিত পরিসরে করার নির্দেশনা দেওয়া হলেও কোন মার্কেটেই ক্রেতা বা বিক্রেতারা তা মানেননি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেরকে শহরের বিভিন্ন সড়কে এবং মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়ে যানচলাচল নিয়ন্ত্রন করতে দেখা গেছে।
তবে বিভিন্ন মার্কেটে, রাস্তায় সাধারন মানুষকে করোনা প্রতিরোধের সকল নিয়স-নীতিকে অবলিলায় উপেক্ষা করতে দেখা যায়। অনেককে এ বিষয়ে জিজ্ঞাস করলেও তারা এড়িয়ে যায়।
কুষ্টিয়া শহরের প্রাণকেন্দ্র এনএস রোডে যান চলাচল সীমিত করা হয়েছে। মানুষ পায়ে হেটে কেনাকাটা করেছে। কিছু দোকান বিপনী বিতান শপিং মলের সামনে সাবান পানি হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা থাকলেও মানুষ তা ব্যবহার করেছে খুব কম। মানুষের ভিড় সামলাতে দোকানের কর্মী ও প্রশাসনকে অনেকটাই অসহায় মনে হয়েছে।
“কি করব, সকাল থেকে এতবার একই কথা বলছি যে এখন এখন একরকম পেরেশান” নাম প্রকাশ না করে জানালেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি বলেন তখন দুপুর।
রবিবার (১০ মে) থেকে কুষ্টিয়া শহরে শুধু জুয়েলারী দোকান ছাড়া সকল দোকানপাট খোলা হয়। সকাল ১০ টা থেকে চলে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত। সকাল থেকে শুধু তৈরি পোষাক কিংবা জুতা-স্যান্ডেলের দোকানই নয় রড-সিমেন্টসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সব দোকানই খোলা দেখা গেছে।
বেচা-কেনার সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা তো দূরের কথা শারীরিক দূরত্বও কেউ রাখেননি। পছন্দের পোষাক, জুতা-স্যান্ডেল ও কসমেটিকস্সহ অন্যান্য সামগ্রী কেনার জন্য ক্রেতাদেরকে একেবারে গা ঘেঁষাঘেঁষি এমনকি ঠেলাঠেলিও করতে দেখা গেছে। অনেকে তাদের শিশু সন্তানদেরকেও সঙ্গে এনেছিল।দোকানদারদের বেশি সংখ্যক ক্রেতার সমাগম ঘটানোর জন্য ‘আসেন আপা’, ‘আসেন ভাই’, ‘কি লাগবে’ ইত্যাদি বলে হাঁক-ডাক করতে দেখা গেছে। মার্কেট করতে আসা মানুষের মধ্যে করোনার ভয় একেবারেই লক্ষ করা যায়নি।
শিশু সন্তান সাথে নিয়ে মার্কেট করতে আসা সুমাইয়া রহমান জানালেন, বাচ্চার জন্যই এসেছেন, বড়রা ঈদের জন্য শপিং না করলেও বাচ্চাদের জন্য কিনতেই হচ্ছে। ছোট ছোট বাচ্চারা দীর্ঘদিন ঘরবন্দি, তাদের আনন্দের জন্য বাইরে এসেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পুলিশ সদস্য জানান, আমরা ভীড় ঠেকাতে হীমশীম খাচ্ছি। প্রধান সড়ক এনএস রোড যানজট মুক্ত রাখতে প্রবেশ নিয়ন্ত্রন করা হচ্ছে। কিছু সড়কের মোড়ে যানবাহন ছাড়া শুধু মানুষ ঢুকতে পারছে।
কুষ্টিয়া বেবি ভ্যেরাইটিজ স্টোরের মালিক আব্দুল হামিদ জানালেন ক্রেতারা নিয়ম নীতি উপেক্ষা করছেন।
“আমি একজন নারী ক্রেতাকে দুরত্ব বজায় রেখে পণ্য পছন্দ করতে বলায় উনি দোকান থেকে বেড়িয়ে পাশের দোকানে চলে গেলেন,” হামিদ জানান।
উল্লেখ্য, করোনার সংক্রমণ রোধে গত ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এতে সরকারি- বেসরকারি অফিসগুলার সঙ্গে সঙ্গে দোকান-পাট ও বিপনী বিতানগুলোও বন্ধ হয়ে যায়। ৫ম দফা সাধারণ ছুটি বাড়িয়ে তা করা হয়ে ১৪ মে পর্যন্ত। এরমধ্যে সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া হল ঈদ মার্কেট।
কুষ্টিয়ায় এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১৮ জন। এদের মধ্যে ৫ জন সুস্থ হয়েছেন।
Leave a Reply